ওসি প্রদীপ আমার কন্যাকে থানায় আটকে রেখে দীর্ঘদিন কুকর্ম করে: কিশোরীর মা

- আপডেট সময় : ১১:১১:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ অক্টোবর ২০২১ ২২৮ বার পড়া হয়েছে
আলো’চিত ও চাঞ্চল্যকর মেজর (অব) সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার পঞ্চম দফার প্রথম দিনের বিচা’রিক কার্যক্রম বেবি বেগমের আংশিক অস’মাপ্ত জেরা দিয়ে শুরু করেন। নির্ধারিত পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে আরও ৬ জনের সাক্ষ্য’গ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে।
রবিবার (১০ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১০টায় কক্স’বাজার জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইলের আদা’লতে ২০তম সাক্ষী বেবী বেগমকে আসামি পক্ষের আইন’জীবীদের জেরা দিয়ে পঞ্চম দফার বিচারকাজ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে আদাল’তের কার্যক্রম। এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় কক্স’বাজার জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে প্রিজ’নভ্যানে কড়া পুলিশ পাহারায় আদালতে আনা হয়।
এ সময় বেবি বেগম আদাল’তকে বলেন, ওসি প্রদীপ ও তার বাহিনী ২০২০ সালে আমার কিশোরী কন্যা’কে অস্ত্র ঠেকিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
এরপর টেক’নাফ থানায়র দ্বিতীয় তলায় দীর্ঘদিন আটকে রেখে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করে ওসি প্রদীপ। ওই সময় ছাড়া পেয়ে মেয়ে বাড়ি ফিরে আসলে কয়েক’বার আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
সেসময় প্রশা’সন ওসি প্রদীপের পক্ষে থাকায় কোন মামলা করার সাহস পাননি দাবি করে বেবী বেগম বলেন, পরে মেজর সিনহা হত্যা মামলার পর তিনি সাহস পেয়ে ওসি প্রদী’পের বিরুদ্ধে আদালতে ধর্ষণ মামলা করেছেন।
এদিকে, রাষ্ট্রপক্ষের আইন’জীবী এড. ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, ১০ অক্টোবর সকালে বিচা’রিক আদালতে ৯ জন সাক্ষীর হাজিরা দেয় রাষ্ট্র’পক্ষ।
তার মধ্যে ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য সম্পন্ন হয়। তারা হলেন: সেনা’বাহিনীর লেফটেন্যান্ট মোঃ মুনতাসীর আরিফিন, সার্জেন্ট মোঃ মোক্তার আহম্মদ, কর্পোরাল নুর মোহাম্মদ, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আবু’জাফর সৈয়দ মঈন, লেন্স কর্পোরাল রুহুল আমিন।
সেনা সদস্যরা সবাই মেজর সিনহা হত্যার রাতে সেনা সদস্য’দের সঙ্গে ওসি প্রদীপের দুর্ব্যবহার ও মেজর সিনহা হত্যাকে পরিকল্পিতভাবে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টার বিষয়টি আদাল’তে তুলে ধরেন। মেজর সিনহা হত্যা মামলা বিচার’কাজে যুক্ত একাধিক আইন’জীবী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদাল’তের সেরেস্তাদার এম. নুরুল কবির গণমাধ্যমকে জানান, ১১ অক্টোবর আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য চার্জ’শীটের ৪০ থেকে ৪৯ নম্বর এবং ১২ অক্টোবর ৫০ থেকে ৫৯ নম্বর সাক্ষীকে সমন দেওয়া হয়েছে আদাল’তে সাক্ষী দেওয়ার জন্য। এ পর্যন্ত মোট ২৬ জন সাক্ষীর জবান’বন্দী ও জেরা সম্পন্ন
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদা’লতের সরকারি কৌঁসুলি ফরিদুল আলম বলেন, মামলায় সাক্ষ্য’দানের জন্য ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে এ পর্যন্ত ৫৯ জনকে আদালত নোটিশ দিয়ে’ছেন। গত ২৩ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জনের জবান’বন্দি নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রোববার পঞ্চম দফায় প্রথম দিনে সাক্ষ্য’গ্রহণের জন্য ৯ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থিত থাকলেও ৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পেরেছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত বছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলা’পুর তল্লাশি চৌকিতে মেজর সিনহা নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে। ঘটনার পর গত ৫ আগস্ট কক্স’বাজার আদালতে প্রদীপ কুমার দাশ, লিয়া’কত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস।