গভীর নিম্নচাপে পরিণত ‘গুলাব’, নামলো হুঁশিয়ারি সংকেত

- আপডেট সময় : ০৮:২১:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ২২৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় গুলাবই দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিল বাংলাকে। ইতিমধ্যেই গুলাব আছড়ে পড়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ-ওড়িশা উপকূলে। যার ফলে শক্তি হারাতে চলেছে বাংলামুখী নিম্নচাপটি। রবিবার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, যে নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে আসার কথা ছিল, সেটি আর তৈরি হচ্ছে না।
তবে কাল মঙ্গলবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভালোই বৃষ্টি হবে। তাই কমলা সতর্কবার্তা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না।
দখিনা বাতাস সক্রিয় থাকায় মঙ্গল ও বুধবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বুধবারের জন্য হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া জেলায়। সম্ভাব্য নিম্নচাপের কথা মাথায় রেখেই মঙ্গল ও বুধবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। রবিবার দুপুরের বিশেষ বুলেটিনে আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, মঙ্গলবার কলকাতা ছাড়াও দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, দুই বর্ধমান, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এটা বর্ষাকালের স্বাভাবিক বৃষ্টি।
গত দু’দিন ধরে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর বলে আসছিল, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সোমবার যে ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে, সেটি শক্তি সঞ্চয় করে মঙ্গলবার নিম্নচাপে পরিণত হবে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সম্ভাবনা উবে গেল কী করে? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ওড়িশা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ এই যাত্রায় নিম্নচাপের ধাক্কা থেকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়টি বেশি মাত্রায় শক্তি শুষে নেওয়ার কারণে নিম্নচাপটি তৈরি হবে না বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। বড়জোর উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি দুর্বল ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সঞ্জীববাবু জানিয়েছেন, রাজ্যের উপকূলে জোরালো হাওয়া বইতে পারে। এ কারণে মৎস্যজীবীদের আপাতত সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে নিম্নচাপ আছড়ে পড়লে বড়সড় দুর্যোগের আশঙ্কা থাকত। অতীতের পরিসংখ্যান বলছে, সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে নিম্নচাপের কারণে বেশ কয়েকবার বন্যা হয়েছে। ১৯৫৬, ১৯৫৭, ১৯৭৮, ১৯৯৫ এবং ২০০০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে।
কয়েকদিন আগে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির অন্যতম কারণ ছিল গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর থাকা একটি ঘূর্ণাবর্ত। বর্ষার বিদায় লগ্নে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন নদী ও বাঁধের জলাধারে জলস্তর এমনিতেই বেশি থাকে। তার উপর বেশি বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। প্রবীণ আবহাওয়াবিদ ও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল মিহির গুহ জানিয়েছেন, বঙ্গোসাগরে কোনও ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে সাধারণত কাছাকাছি সময়ে ফের নিম্নচাপ তৈরি হয় না। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর কেন নতুন নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল, তা বুঝতে পারছি না।